কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আজ বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা ফাহমিদুল হকের উপর হামলাকারী পুলিশ সদস্য ও কোটা আন্দোলনকারীদের উপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বিচারের দাবি করেন।
সমাবেশ থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র মাসুদ আল মাহাদি বলেন, আমরা বর্তমানে একটা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে বসবাস করছি। যেখানে ফেসবুকে একটা লাইক দেয়া যায় না, রাস্তায় দাঁড়ানো যায় না। এখানে শিক্ষকদের উপর হামলা হচ্ছে, ছাত্রদের মারধর করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কী এসব দেখেন না। তার অধীনে আমরা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে বাস করছি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী কাজী আনিজ বলেন, আমরা এখানে আমাদের প্রাণের দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে এসেছি। সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো স্যারের উপর হামলাকারীদের বিচার করুন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী বলেন, গত কয়েকদিন হলো আমি মানসিকভাবে বিপর্যয় বোধ করছি। এটা কেমন বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে যাকে পাচ্ছে, তাকে সেখানেই মারধর করা হচ্ছে। এখানে কারও কোনও নিরাপত্তা নেই। নিজ ক্যাম্পাসেই শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীন। হামলার প্রতিবাদ করতে গেলে শিক্ষকদের উপর হামলা করানো হচ্ছে পুলিশ দিয়ে। ছাত্র-শিক্ষকদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক গীতিআরা নাসরিন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ব্যতিক্রমী ইতিহাস রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু এখন কেন আন্দোলন সংগ্রাম করা যাচ্ছে না? ছাত্রদের উপর হামলা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন নীরব। ছাত্রদের উপর এই হামলার প্রতিবাদ জানাতে যায় সচেতন নাগরিকরা। কিন্তু আমরা দেখলাম সেখানেও পুলিশকে দিয়ে হামলা চালানো হলো। আমরা এমন এক দেশে বাস করছি, যেখানে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যায় না।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজিম উদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক সামিনা লুৎফাসহ আরও অনেকে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।