যুদ্ধে জড়াচ্ছে সৌদি-ইরান?

0

লেবনানের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির ইস্তফা দেওয়ার পর চার দিনও কাটল না। দেশটিকে আরো সন্ত্রস্ত করে সে দেশ থেকে নিজের নাগরিকদের ফিরে আসার নির্দেশ দিল সৌদি আরব।

এমনকি সৌদি আরবের নাগরিকদের অন্য দেশ থেকে লেবাননে যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা নাগাদ সৌদির সরকারি সংবাদ মাধ্যমে এই ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ওই অঞ্চলে বাড়ছে উত্তেজনা।

গত শনিবার, ইরানের সঙ্গে বৈঠকের পর সৌদি আরবে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লেবাননের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। তাঁর এই আচমকা ঘোষণায় নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে লেবানন। দীর্ঘ দিন ধরেই মোটামুটি দুই ভাগে বিভক্ত লেবানন। একটি শিবির চালায় ইরান সমর্থিত শিয়া হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। আর একটি শিবিরকে সমর্থন করে সুন্নি সৌদি আরব। সৌদি সমর্থিত এই গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন হারিরি।

পদত্যাগ করে হারিরি ঘোষণা করেন, ইরান ও তার শরিক দল হিজবুল্লাহ সমগ্র লেবাননের দখল নিয়ে নিয়েছে।

ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠান-বিরোধী কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নেতৃত্বের সংকটে থাকা লেবানন অবশ্য হারিরির পদত্যাগের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আওউন জানিয়ে দিয়েছেন, হারিরির সঙ্গে দেখা না হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা মেনে নিচ্ছেন না। তাঁকে দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়ে হারিরির দলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরুন হারিরি। লেবাননের সম্মান ফেরাতে এবং নাগরিকদের আতঙ্ক দূর করতে তাঁর ফেরাটা জরুরি।

সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হারিরিকে বন্দি করে রাখারও অভিযোগ করেছে তারা। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সৌদি প্রশাসন।

হারিরির আচমকা পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পরই ইরান-সৌদি যুদ্ধের আশঙ্কা করছিলেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ। এবার দেশের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার নির্দেশে সেই আশঙ্কাই আরো জোরালো হলো বলে মনে করছেন তাঁরা। আর এই দুই দেশের যুদ্ধ হলে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হবে নেতৃত্বহীন লেবাননকেই।

বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কুয়েতও লেবাননে তার নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

কী হতে পারে এতে? আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, সৌদি বলয়ের চার-চারটি দেশ একযোগে ভ্রমণ-নিষেধাজ্ঞা জারি করায় লেবানন ঘিরে উত্তেজনা আরো বেড়ে গিয়েছে। যা অর্থনৈতিক সংকটের চেয়েও বড় আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা। সৌদি আরবের এই জোট অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আরো কোনো নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে। এখনই সামরিক পদক্ষেপের কোনো ইঙ্গিত না মিললেও পরিস্থিতি সে দিকেই এগোচ্ছে বলে আশঙ্কা একাংশের।

কিন্তু হারিরি এখন কোথায়? শোনা যাচ্ছিল, হারিরি হয়তো ফ্রান্সের কাছেও রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে থাকতে পারেন। কাল সৌদি সফরে এসেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। হারিরির তরফে তিনি যদিও এমন কোনো অনুরোধ পাননি বলে জানিয়েছেন।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.