গত দুবছরে করোনায় মানুষ ছিল ভীতবিহ্বল। ঈদ আনন্দ ছিল অনেকটা ফানসে। বাজারে কেনাকাটা যেমন ছিলনা, তেমনি ঈদ উদযাপনেও ছিলনা আনন্দ। তার সম্পূর্ন উল্টো চিত্র দেখতে পাওয়া যায়, এবারে ঈদের কেনাকাটায়। ঈদ উৎসবকে ঘিরে আয়োজনে মেতেছে সবাই। দেশের ছোট-বড় সব মার্কেটের পাশাপাশি চট্টগ্রামের মার্কেটগুলো এখন লোকে লোকারণ্য। সবারই উদ্দেশ্য ঈদ শপিং। শিশুসহ সব বয়সের মানুষে জমজমাট হয়ে উঠেছে ঈদ বাজার। পরিবারের সবার জন্যই এ সময় চাই নতুন সবকিছু। অনেকের কাছে অর্থের যোগান না থাকলেও সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে কর্জ করে হলেও কিনতে হবে নতুন কাপড়। একজন বিক্রেতা বলছে, একদিকে রমজান, অন্যদিকে এবার ভ্যাপসা গরম পড়ছে। তাই দিনের বেলায় ক্রেতা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর জমে উঠে মার্কেটগুলো। আজ নগরীর চকবাজার, ২নং গেইট, নিউমার্কেট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, আগ্রাবাদ, জিইসি মোড় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় শো রুমের পাশাপাশি ক্রেতাদের আকর্ষণ ফুটপাতেও। অনেক কালেকশন রয়েছে শো রুমে না থাকলেও ফুটপাতে পাওয়া যাচ্ছে। আবার দামও অনেকটা কম। আবার বেশিরভাগ কোম্পানিগুলো ক্রেতাদের রুচি আর চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে হরেক রকম ডিজাইনের জুতা-স্যান্ডেল দিয়ে শোরুম সাজিয়েছে। যাতে করে ফ্যাশন প্রেমীরা রুচি ও পছন্দসই জুতা কিনতে পারে। ছোট বড় সবার ঈদের পোষাকে সাথে চাই নতুন জুতা। তাই সবার নজর থাকে ফ্যাশনের প‚র্ণতার দিকে। সবকিছু কেনার পর যদি মানানসই এক জোড়া জুতা বা স্যান্ডেল না হয়, তাহলে যেনো ফ্যাশনে প‚র্ণতা পায় না বলে জানান ক্রেতারা।
প্রতিবারের মত মেয়েদের ফ্যাশন আর পছন্দের দিকে লক্ষ্য রেখে অধিকাংশ ফ্যাশন হাউজগুলো তাদের স্যান্ডেলের ডিজাইনে রেখেছে ভিন্নতা। নিজস্ব ধারাতেই স্যান্ডেলের ডিজাইন করেছে ফ্যাশন হাউজ আর কোম্পানিগুলো। তবে মেয়েদের বেশির ভাগ স্যান্ডেলই ফ্ল্যাট ও চটি স্যান্ডেল এখনো ট্রেন্ডি। অনেকে ফ্যাশন হাউজ পুঁতি, বিডস দিয়ে তৈরি নান্দনিক ডিজাইনের স্যান্ডেল বাজারে এনেছে এবারের ঈদে। এছাড়া চোখে পড়ার মতো রয়েছে বড় পাথরের ব্যবহারে ফুলের নকশা করা স্যান্ডেল, যার পেছনের অংশে চেইন রয়েছে। তবে বেশি উচ্চতার নয় স্যান্ডেলগুলো। একটু জমকালো ভাব ফুটিয়ে তুলতে করা হয়েছে কারচুপি।
২নং গেইট এলাকার ষোলশহর সুপার মার্কেটে কথা হয় মো. আজিম নামে এক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, এখানের শপিংমল এত বড় নয়, কালেকশনও কম। তবু মানুষের ভীর এখানে কম নয়। অন্যান্য শপিং মল থেকে এখানে দাম অনেকটা কম, দর কষাকষি করে নেয়া যায়। ঈদ উপলক্ষে নিজের পছন্দ মতো জামা নিতে এসেছি। বাজেটের মধ্যে হলে নিয়ে নিব।
হাটহাজারী থেকে আগত এক মহিলা ক্রেতা জেবুন্নেছা বলেন, করোনার কারনে গত বছর সন্তানদের নিয়ে তেমন ঈদ উদযাপন করতে পারি নাই। এবার সবাইকে নিয়ে প্রাণের উচ্ছাস নিয়ে ঈদ করতে বাজারে এলাম। দাম তেমন ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই, তবুওতো পরিবারের সকলের জন্য কিছু কিনতে হবে।
সেন্টার প্লাজার জুতার দোকানদার মো. সফিক বলেন, ঈদ উপলক্ষে বেশ বেচাবিক্রি হচ্ছে। আমরা দেশিয় আইটেমের পাশাপাশি চীন, ভারত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের জুতা রেখেছি। যা টেকসই, মজবুত ও পড়তে আরাম। দাম বেশি রাখা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সীমিত লাভ রেখে একদম নামমাত্র মূল্যে আমরা জুতা বিক্রি করছি। সুতরাং, দাম নিয়ে কোন ক্রেতাদের কোন সংশয় নেই।