Tuesday, April 29

চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও কালুরঘাটে নতুন সেতু দ্রুত বাস্তবায়নে ৪ প্রস্তাবনা —

0

চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের পুরোধা তথা নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল কর্ণফুলীর কালুরঘাটে নতুন সেতু বাস্তবায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে সরকারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেতুর কাজ দ্রুত কাজ বাস্তবায়নে ২০২৮ সালের মধ্যে সমাপ্ত করাসহ ৪ প্রস্তাবনা দিয়েছে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম।
আজ ৩ জুলাই চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের এই প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিন। এতে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ ও চাকসুর সাবেক ভিপি মাজহাজারুল হক চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীণ সাংবাদিক মাঈনুদ্দীন কাদের শওকত, বাংলাদেশ দোকান মালিক ফেডারেশন চট্টগ্রামের সভাপতি আলহাজ্ব ছালামত আলী, বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব নুর আলী, সাবেক মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরীর সন্তান ও আওয়ামীলীগ নেতা জসিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম ওয়াসার সাবেক প্রধান প্রকৌশলী নুরুল আবছার, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ চট্টগ্রামের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহ্ আলম শিকদার, ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব আকরাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনছুর
আলম, বিশিষ্ট সংগঠক কামরুল ইসলাম, কবি তসলিম খাঁ, মো. মাসুদ খান, মো. আকতার হোসেন, মো. আলী আজম, মেহাম্মদ নুর, নারীনেত্রী মেহেরুন্নেছা নিপা, শারমিন আক্তার, রহিমা আক্তার ডলি ও পঙ্কজ কুমার রাহুল প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফোরামের মহাসচিব কামাল উদ্দিন বলেন— “চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের রূপকার, তৎকালীন বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন সর্বপ্রথম ১৯৯০ সালে সংগ্রাম কমিটির বোয়ালখালী শাখার মাধ্যমে কালুঘাটে নতুন সেতু বাস্তবায়নের দাবী উত্থাপন করেছিলেন।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়নের দীর্ঘ আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে অনশন, মানববন্ধন, মাননীয় প্রধানন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি, প্রতিবাদ সভা, মতবিনিময় ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কালুরঘাট সেতুর দাবী জাতিয় দাবিতে পরিণত হয়। এ দাবী বিলম্বে হলেও বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে জেনে বৃহত্তর চট্রগ্রামবাসী আশার আলো দেখছেন।

এ ব্যাপারে তৎকালীন সংসদ মঈনুদ্দীন খান বাদল ও সাংসদ মোসলেম উদ্দিন আহমেদের ভূমিকার জন্য তাঁদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় এবং এছাডাও এর আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য নাগরিক ফোরামের পাশাপাশি কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সংগঠনকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানানো হয়। নির্বাচনের পর আট আসনের সাংসদ এম এ সালাম ও নোমান আল মাহমুদকেও সংসদে কালুরঘাট সেতুর বিষয়ে কথা বলার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয় ।
চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল এই সেতুর দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নাগরিক ফোরামের চারটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে এই জুলাই মাসে মধ্যে প্রকল্প একনেকে পাশ করা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছেন ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা হবে, তবে ফোরামের প্রস্তাব হল ২০২৫ সালের মার্চের দিকে এগিয়ে আনার, ১৪০ একর ভূমি দ্রুত অধিগ্রহণ করা যার মধ্যে ষাট শতাংশ রেলওয়ের ও সরকারি খাস জমি। অপর প্রস্তাবে ২০৩০ সালের আগে ২০২৮ সালের মধ্যে সেতু নির্মাণকাজ শেষ করার দাবী জানানো হয়। এ বিষয়ে ঊদাহরণ দিয়ে বলা হয়, দেশের সর্ববৃহত্তম পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৬.১৫ কি.মি. অর্থাৎ ৬১৫০ মিটার, প্রস্তাবিত কালুরঘাট সেতু হল মাত্র ৭০০ মিটার যা পদ্মা সেতুর চেয়ে ৮ ভাগেরও কম, সেখানে পদ্মা সেতুতে বিশাল ভূমি হুকুম দখল ও নদী শাসন পূর্বক নির্মাণ করতে সময় লেগেছে ৮ বছর। সেই তুলনায় ২০২৮ সালের মধ্যে কালুরঘাট সেতুর কাজ সরকার চাইলে শেষ করতে পারবেন। এতে জাতীয় অর্থনীতির লাভ হবে। এই সাথে সেতুর কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজনে দেশের স্বনামধন্য সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সাহায্য নেয়ার আহ্বান জানান। এ প্রসংগে বলা হয়, আমরা আগেও বলেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সেতুর ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন এবং তাঁর আন্তরিকতার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রানালয় ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এই ব্যাপারে চরম গাফেলতির কারণে সেতু নির্মাণে অনেক কালক্ষেপন হয়েছে। এতে ব্যয়ে বরাদ্দ ভীষণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে, প্রকল্পের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নে আমাদের এসব প্রস্তাব দিতে হলো।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.