কোটা সংস্কারে এখনও আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়নি: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

0

সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা বাতিল, সংরক্ষণ বা সংস্কারের বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে বিবেচনাধীন আছে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, কোটা নিয়ে জটিলতা আছে, একটু সময় লাগবে।

সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল, সংরক্ষণ বা সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত আসবে। এটা সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে সক্রিয় বিবেচনাধীন আছে। আমাদের পর্যায়ে এখনো আসেনি। তবে আপনারা যত সহজভাবে এটা বিশ্লেষণ করছেন, তত সহজ নয়। জটিলতা আছে।

বিচার-বিশ্লেষণ কবে শেষ হবে এমন প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, ‘এটা অনুমান করা কঠিন। একটু সময় লাগবে মনে হচ্ছে।’

এর আগে গত শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলন শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূরসহ সাত শিক্ষার্থী আহত হন।

আজ সোমবারও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রীকেও মারধর করেছে।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ করা আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান রয়েছে।

এ কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধও করছিলেন তারা। গত ৯ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে বসে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীরা। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৭ মে পর্যন্ত সময় নেন ওবায়দুল কাদের। কিন্তু এরপরের দিনও আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।’

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.