চট্টগ্রামে ওয়াসার পানি পরীক্ষার নির্দেশ

0

চট্টগ্রামে ওয়াসার পানিতে ‘হেপাইটাইটিস-ই’ ভাইরাস আছে কি না, তা পরীক্ষা করতে কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সম্প্রতি জন্ডিসে আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো.আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন মো. হানিফ (ফরহাদ) নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।

চট্টগ্রামের হালিশহরে জন্ডিস আক্রান্ত নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে দৈনিক আজাদী, দৈনিক পূর্বকোণ ও ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন মো. হানিফ।

মো. হানিফ জানান, আদালত রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন। রুলে চট্টগ্রাম সিটির জনগণের জীবন রক্ষায় ব্যাকটেরিয়া মুক্ত পানি সরবরাহে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, নিরাপদ পানি সরবরাহের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং জন্ডিসে আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মহিউদ্দিন হানিফ বলেন, ‘আদেশে আদালত জন্ডিসে উপদ্রুত এলাকায় চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে হেপাইটাইটিস-ই ভাইরাস আছে কি না, তা পরীক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এক মাসের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করতে বলেছেন। এ কমিটিতে স্থানীয় প্রশাসনের দুজন এবং বিশেষজ্ঞ থাকবেন তিনজন। কমিটির প্রতিবেদন ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে।

গত ৩০ জুনের দৈনিক আজাদীর খবরে বলা হয়, ‘হালিশহরে পানিবাহিত রোগ জন্ডিসের প্রাদুর্ভাবে চরম উৎকণ্ঠায় আছেন সেখানকার বাসিন্দারা। আড়াই মাস আগে থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হলেও সংকট উত্তরণে স্বাস্থ্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম ওয়াসা সমন্বিতভাবে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন আগ্রাবাদ ও হালিশহর এলাকার বাসিন্দারা। এর মধ্যে নতুন খবর এসেছে, আগ্রাবাদ এলাকার একটি রোগ নিরূপণি কেন্দ্রে গত দুই মাসে আরো ২২৮ জন জন্ডিস রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে হালিশহরে এখন পর্যন্ত জন্ডিসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২৪ এ।

এদিকে হালিশহরের পাশাপাশি আগ্রাবাদ বেপারিপাড়া ও সিডিএ আবাসিক এলাকায়ও জন্ডিসের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি আজ হালিশহরে (গতকাল) গিয়েছিলাম। মূলত জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে কমার্স কলেজের যে ছেলেটা মারা গেছে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতেই গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা একটি ভয়াবহ খবর জানতে পারি। ফইল্লাতলী বাজারের কাছে খালেদা ভিলা নামে একটি ভবনে মোট ২৫টি পরিবারের মধ্যে ২৬ জনই জন্ডিসে আক্রান্ত। পরে আমি সেই ভবনের পানির রিজার্ভার ট্যাংক চেক করতে গিয়ে খুব বিস্মিত হই। দেখা গেছে, পানির ট্যাংকের ওপর ঢাকনা নেই। উন্মুক্ত এই রিজার্ভ ট্যাংকে টিকটিকি ও তেলাপোকা পড়ে আছে।’

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.