যতই নগর জীবন দৌড়ে মরুক, সারা দিনে একবার অন্তত ভাত না হলে কি আর হয়! আজকাল হোম ডেলিভারি আর মাল্টিকুইসিনের চক্করে যাঁদের হেঁশেলে হাঁড়ি চড়ে না, তাঁদের ব্যাপারটা না হয় আলাদা। কিন্তু যাঁরা এখনও মাছে ভাতে রসে বশে থাকতে চান, তাঁরা মাঝেমাঝে একটা সমস্যায় পড়েন। কখনও কখনও বাসি ভাত থেকে যায়, কী করবেন তাঁরা? হ্যাঁ, সেটা ফেলে দিলেই হয়। কিন্তু ভাত ফেলতে মায়া লাগে, এটা তো সব মধ্যবিত্তের মনের কথা প্রায়। তাহলে সেই বাসি ভাত কি ফেলে দেবেন? না কি অন্য কোনও উপায় আছে? আছে তো বটেই। আমরা কে না জানি জল দেওয়া বাসি ভাত বা পান্তাভাতের কথা! কিন্তু এই পান্তা শুনেই যাঁরা নাক সিঁটকোলেন, তাঁরা কি জানেন, এই পান্তাতেই আছে অনেক গুণ।
বাসি ভাত কোনও একটা মাটির পাত্রে অল্প জল ঢেলে সারারাত রেখে দিন। পরের দিন সকালে ওই দু মুঠো পান্তাভাতই খেয়ে নিন আনন্দে। জেনে নিন তাতে কী কী লাভ…
১. সারাদিনে ভাজাভুজি বা রাস্তার খাবার খাওয়া, জল কম খাওয়া- ইত্যাদি কারণে আপনার দেহের তাপমাত্রা যথেষ্ট বেড়েই থাকে। কিন্তু সকালের এই পান্তাভাত আপনাকে দারুণভাবে ঠাণ্ডা রাখতে পারে। তাই শরীর গরমের সম্ভাবনা কমে যাবে এই পান্তাতেই।
২. খুব কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন কি? তাহলে অবশ্যই এই পান্তাভাত খান। আপনার বারবার টয়লেটে যাওয়া এবং কষ্ট পাওয়া থেকে সহজ পথেই মুক্তি মিলবে। চালে এমনিই ফাইবার থাকে অনেকটা। তাই পান্তাভাতের ফাইবার আপনার সিস্টেম ক্লিয়ার রাখতে সাহায্য করবে।
৩. সারাদিনের জন্য ফুরফুরে এনার্জিতে ভরপুর থাকবেন আপনি। পান্তাভাতের এনার্জি এতটাই বেশি থাকে, কোনও ক্লান্তিই সে ভাবে কাজ করবে না আপনার।
৪. সারাদিন দৌড়ঝাঁপে আপনার খাওযার সময়ই হয় না? আর তা থেকেই আলসার বাধিয়ে বসে আছেন? ওষুধ কিন্তু সেই পান্তাভাত। এই ভাত আপনার আলসারকে অনেকটাই বাগে আনতে পারে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনবার খান এই পান্তাভাত। আলসারকে বলুন দূর হটো।
৫. সকালে উঠেই চা বা কফিতে আসক্তি রয়েছে আপনার? আর তাতে শরীরও বিগড়োচ্ছে কি? পান্তাভাত খেয়ে ফেলুন, আর এই চা কফির নেশা থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলুন।
তবে এই বাসি ভাত এমনি খেতে আপনার নাও ভালো লাগতে পারে, একটু পেঁয়াজ কুচি, লঙ্কা কুচি দিয়ে খেয়ে দেখতেই পারেন। আর সেই গানটা নিশ্চয় মনে আছে, পান্তাভাতে টাটকা বেগুন পোড়া….সঙ্গে সেটা থাকলে তো কথাই নেই।
সুফল যখন অনেক, তাই খেয়েই দেখুন না একবার।