যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ১৯২ দেশের শরণার্থী চুক্তিতে সমর্থন

0

বিশ্বজুড়ে এখন নতুন করে অভিবাসন চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা চলছে। তবে জাতিসংঘ বলছে, শরণার্থী চুক্তিও এই মুহূর্তে সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে আগামী সপ্তাহে মরক্কোর ম্যারাকেশে এই চুক্তির বিরোধিতা করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য ১৯২টি সদস্য রাষ্ট্রের সবাই এই চুক্তিতে সমর্থন জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র কেবল অভিবাসন চুক্তিই প্রত্যাখ্যান করেনি, শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক চুক্তিও অনুমোদন করেনি দেশটি। এই প্রস্তাবিত চুক্তি ‘মার্কিন অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ বলে মনে করে ট্রাম্প প্রশাসন।

যদিও চুক্তিটি মানতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। আর পাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনেরও কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, এই চুক্তিতে এমন কিছু নীতিমালা রয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই শরণার্থী সংকট মোকাবেলার মাধ্যমে প্রাণহানি রোধ করতে পারবে। তবে এর সর্বোচ্চ ফল পেতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন।

শরণার্থী সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বিশ্বজুড়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন বার্লিনভিত্তিক শরণার্থী বিশ্লেষক মার্টিন এঙ্গলার।

তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন পুনর্বাসিত অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে এনেছে। এ ধারা ট্রাম্পের মেয়াদের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এবং ট্রাম্প নিজে বিশ্বজুড়ে এ বিষয়ক যে নীতির প্রচার করছেন, সেটিই সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়। অনেক সরকার এখন তার অবস্থানকে উদাহরণ হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।

জাতিসংঘের অভিবাসন চুক্তিতে অর্থনৈতিক অভিবাসীদের ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে একটি নির্দিষ্ট মান বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনীতিবিদরা এর বিরোধিতায় সরব হয়েছেন।

বিরোধীদের অভিযোগ, এই চুক্তির ফলে কোনও রাষ্ট্রের নিজস্ব আইন পাল্টে নিয়ন্ত্রণহীন অভিবাসনের পথ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। চুক্তির খসড়ায় অবশ্য স্পষ্ট করেই বলা আছে, প্রতিটি দেশ নিজেদের অভিবাসন নীতি নির্ধারণ করবে।

অন্যদিকে জাতিসংঘের প্রস্তাবিত শরণার্থী চুক্তিতে তুলে ধরা হয়েছে যুদ্ধ ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে যারা সীমেন্ত পাড়ি দিচ্ছেন, তাদের কথা। এই চুক্তির মূল লক্ষ্য, শরণার্থীদের জীবনমানের উন্নয়ন, গ্রহীতা রাষ্ট্রের সহায়তা এবং শরণার্থীদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা করা।

২০১৫ সালে শরণার্থী সংকট তীব্র আকার ধারণ করার পর থেকে এই চুক্তির কাজ শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সে বছরই সবচেয়ে বড় শরণার্থীর ঢল নামে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় নিতে সংকট মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে জার্মানি। তবে এ বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দেয় দেশটিতে, উত্থান ঘটে বিদেশি বিদ্বেষের।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.