ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, নওগাঁ প্রতিনিধি: মানবতার অপর নাম মোবারক হোসেন প্রতিবন্ধী স্কুল যেন। “মানুষ মানুষের জন্য-জীবন জীবনের জন্য” এই পরম সত্যটির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলায় সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ব্যতিক্রম ধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোবারক হোসেন প্রতিবন্ধী স্কুল।
এই প্রতিবন্ধী স্কুলটি এলাকার হত দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী অভিভাবকদের এক নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। মোবারক হোসেন প্রতিবন্ধী স্কুলটি এলাকাতে ব্যাপক সাড়া জাগালেও পাননি সরকারের তেমন কোনো সু নজর, যার ফলে জোটেনি কোনো সরকারি সহায়তা। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে এলাকার বিভিন্ন বয়সী আড়াই শতাধিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন করার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।
বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে পোরশা উপজেলার নিতপুর কপালির মোড়ে স্থাপন করা হয়।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা শাহজাহান আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০১৩ সালে ১০ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠা করা হয়।
তিনি আরো জানান, তার মৃত পিতা মোবারক হোসেনেরনামে তা নামকরণ করা হয়েছে মোবারক হোসেন প্রতিবন্ধী স্কুল। স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা শাহজাহান আলী একজন স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ৬টি আধাপাকা কক্ষ এর মধ্যে ৩টি শ্রেণি কক্ষ, একটি অফিস কক্ষ ও একটি সেবা কক্ষ। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ ১১ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মচারী কর্তব্যরত রয়েছেন। বিদ্যালয়ে মোট ২৫৭ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে ছাত্র ১৩০জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ১২৭জন। এদের মধ্যে শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী ৫০ জন, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ৭০ জন,দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৪০ জন, বাক প্রতিবন্ধী ৪০ জন, ডাউন সিনড্রোম ১০ জন, সেরিব্রাল পালসি ১০ জন, এবং বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী ৩৭ জন। এখানে প্রথম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত যাদের বয়স ৫-২০ বছর সে সকল প্রতিবন্ধীদের ভর্তি নেন বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: মওদুদ আহম্মেদ জানান, এখানে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার বেতন নেওয়া হয় না অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিনা বেতনে আমরা ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দিয়ে থাকি।
তিনি আরো জানান, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা জনাব শাহজাহান আলীর পিতা ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা এবং প্রতিবন্ধীদের প্রতি একান্ত ভালোবাসা থেকেই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
স্থানীয় এমপি বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার, জেলা প্রশাসক ও পোরশা উপজেলা প্রশাসন কিছু অবকাঠামোগত সহযোগিতা করলেও পাননি তেমন কোনো বড় ধরণের সরকারি সহায়তা। স্কুলের যাবতীয় খরচ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় চলে বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিবে স্কুলটির উন্নয়নে এমনটিই প্রত্যাশা করেন স্থানীয় লোকজন।
এমতাবস্থায়, বর্তমানে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা।
1 Comment
স্কুলটির ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার চাই