এসকে সিনহার বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

0

ফারমার্স ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল কমিশনের এক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এরপরই মামলার বিচারিক কাজ শুরু হবে।

দুদকের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান জানিয়েছেন, এসকে সিনহা দুজন সাধারণ ব্যক্তির নামে ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং মামলা হয়েছিল। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেনজির আহমেদ এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে করা চার্জশিট তৈরি করেছেন। মৃত হিসাবে প্রমাণ মেলায় চার্জশিট থেকে এক আসামির নাম বাদ দেয়া হয়েছে। আর নতুন একজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার নাম বাদ দেয়া হয়েছে তিনি হলেন ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুলশান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ।

নতুন করে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীকে।

এসকে সিনহা বিদেশে যাওয়ার আগে দুদক অভিযোগ পায় তিনি সাবেক ফারমার্স ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে দুই ব্যক্তির নামে নেয়া চার কোটি টাকা তার ব্যাংক হিসাবে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। অভিযোগ পেয়ে ওই বছরই তদন্তে নামে দুদক। দীর্ঘ তদন্তের পর চলতি বছরের ১০ জুলাই সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাউদ্দিন, ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ, ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফি উদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো.লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, একই এলাকার নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় সিমি।

দুদক সূত্র জানায়, আসামি মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ২০১৬ সালের ৬ই নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখায় দুটি চলতি হিসাব খোলেন। পরের দিন তারা দুই কোটি করে চার কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। ব্যাংক হিসাব খোলা ও ঋণ আবেদনপত্রে দুজনই উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কের ৫১ নম্বর বাড়ির ঠিকানা দেয়া হয়েছে। বাড়িটি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যক্তিগত সম্পত্তি।

ঋণ আবেদনে জামানত হিসাবে রণজিৎ চন্দ্র সাহার স্ত্রী সান্ত্রী রায় সিমির সাভারের ৩২ শতাংশ জমি দেখানো হয়। তারা দুজনেই এসকে সিএনহার পূর্ব পরিচিত। দুদক জানায় ঋণ আবেদন দুটি কোনো রকম যাচাই বাছাই, রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ এবং ব্যাংকের কোনও নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। ওদিকে এসকে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা করেছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।

দুদকের তদন্তে এই অভিযোগের সত্যতা না মেলায় দুদক এসকে সিনহাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আর মিথ্যা মামলা করার জন্য দুদক নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলার অনুমোদন দিয়েছে।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.