কাপাসিয়ায় করোনা প্রতিরোধে যেভাবে কাজ করছেন উপজেলা চেয়ারম্যান

0

শামীম শিকদার,কাপাসিয়া (গাজীপুর): গাজীপুরের কাপাসিয়ায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কাজ করছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ আমানত হোসেন খান।

উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মজীবীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে নজরদারি করছেন তিনি। দাঁড়িয়েছেন করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় দতদরিদ্র পরিবারের পাশে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করছেন। এই ক্লান্তিকালে হতদরিদ্রদের জন্য কাজ করা সামাজিক সংগঠনকে সহযোগিতা করে সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিদের মনোবল শক্ত রাখছেন। রাতের আঁধারে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন অসহায় হতরিদ্রদের ঘরে। উপজেলায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কমিটিসহ গঠনমূলক ভাবে করছেন বিভিন্ন কাজ। লকডাউনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও ব্যাংকারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য।

নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ১১ ইউপিকে দিয়েছেন করোনা প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী। যেখানে ছিল স্যুট, গ্লাবস, মাস্ক, গগলস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্প্রে মেশিন ও জীবাণুনাশক ওষধ। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ডায়াবেটিস সমিতি, ৬টি ব্যাংক, ১০টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ১১টি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সাংবাদিকদের মাঝে প্রায় ৬ শতাধিক পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বিতরণ করেছেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি কর্মহীন অসহায় হতরিদ্রদের ঘরে খাবারও পৌঁছে দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আমানত হোসেন। বিশেষ ভাবে নজর রেখেছেন নিন্ম আয়ের শ্রমজীবী মানুষের প্রতি। নাপিত, শীল, মুচি, চা ও হোটেলের কর্মচারী, পরিবহন শ্রমিক এবং ইমাম মোয়াজ্জেমসহ অসহায় প্রায় ৩ হাজার পরিবারে খাদ্য সমাগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, আলু, চিনি পেঁয়াজ, রসুন। এক সপ্তাহে উপজেলা সদর, বাঘিয়া, চকবড়হর, দস্য নারায়নপুর, টোক, পাবুর, বলখেলা, তরগাঁও, উত্তর খামের, সাফইশ্রী, রায়নন্দা, কাসেরা, মৈশন, ত্রিমোহনী, আনজাব, আমরাইদ, গিয়াসপুর এলাকা ঘুরে তিনি এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। করোনাকালীন সময়ে টোক নয়ন বাজার এলাকার মানবতার ঘরের জন্য পরোক্ষ ভাবে কাজ করছেন আমনত হোসেন খান। রাতের আঁধারে মানবতার ঘরের গাড়ি খাবার নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। পৌঁছে দিচ্ছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সমাগ্রী। সে মানবতার ঘরের খাবার কেনার আর্থিক সহযোগিতার তিনি করছেন বলে জানান মানবতার ঘরের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মোমতাজ উদ্দীন। সুলতানপুর গ্রামের রিকশাচালক সোহরাব উদ্দীন ঘর বানানোর জন্য ১৫ বছর ধরে জমানো ২৬ হাজার টাকায় অসহায়দের খাবার দেওয়ার পর তাকে ঘর করে দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছেন।

উপজেলা সাফাইশ্রী গ্রামের রাজিয়া বেগম, কাসেরা গ্রামের আব্দুল মান্নান, আমরাইদ গ্রামের মাসুমা বলেন, আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রী পেয়েছি। তিনি আমাদের ঘরে এসব খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। আমরা খুব আনন্দিত।

কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. মোঃ আমানত হোসেন খান বলেন, এই ক্লান্তিকালে মানুষের কল্যাণে সাধ্য মতো পাশে থাকার চেষ্টা করছি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অসহায় মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি। করোনা প্রতিরোধে আরো বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এ ব্যপারে জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসনসহ অনেকে সহযোগিতা করেছেন।

তিনি আরো বলেন, শুরু থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ ইসমত আরা। তিনি করোনা প্রতিরোধ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিবন্ধকতা নিরসনে এখনও কাজ করে যাচ্ছেন। তবে মানুষ সচেতন না হলে কোন ভাবেই করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.