কুড়িগ্রাম পিটিআই প্রশিক্ষণার্থীদের ব্যবহ্নত ম্যাসেঞ্জারে অশ্লীল বার্তা

0

কুড়িগ্রাম পিটিআই প্রশিক্ষণার্থীদের ব্যবহ্নত ম্যাসেঞ্জারে অশ্লীল বার্তা

আরিফুল ইসলাম সুজন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : শিক্ষক নামক মহান পেশায় জড়িত এবং আগামি দিনের নাগরিক গড়ার কারিগর হিসেবে পরিচিত কতিপয় শিক্ষকের কর্মকান্ডে বিব্রতকর অবস্থায় কুড়িগ্রাম প্রাইমারী ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (পিটিআই) এ ২০১৮-২০১৯শিক্ষাবর্ষে প্রশিক্ষরত ডিপিএড শিক্ষকরা। তাদের গ্রুপ ম্যাসেঞ্জারে এক শ্রেণির পারভার্ট শিক্ষকদের অশ্লীল বাক্যবাণে দিশেহারা সহ-শিক্ষকরা। শুধু ম্যাসেঞ্জারেই সীমাবদ্ধ নয়; ক্লাসে বা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে এসব প্রশিক্ষণরত পুরুষ শিক্ষকদের অশালিন ইঙ্গিত ও আচড়ণে মুখ ফুটে প্রতিবাদ করলেও বিপদ। স্থানীয় অধিবাসী এবং সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে এসব শিক্ষকদের টার্গেট বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা নারী শিক্ষকদের উপর। ফলে পরিস্থিতির শিকার এসব নারী শিক্ষক সামাজিক মাধ্যমসহ শিক্ষাঙ্গনে যে অশ্লীলতা বিরাজ করছে তার প্রতিকার চান।
জানা যায়, পিটিআই এ প্রশিক্ষণার্থীদের ব্যবহৃত ম্যাসেঞ্জারে বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষণরত পুরুষ শিক্ষক আ লিক ভাষায় অশ্লীল কথাবার্তা চালিয়ে যান। এমন অশ্লীল কথাবার্তার ফলে ব্রিবতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় অন্যান্য শিক্ষকদের। মুকুল নামে একজন ম্যানেঞ্জারে স্কেচ করা একটি মেয়ের ছবি দিয়ে সেখানে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে মেয়েরা প্রেমে পড়ার আগে তাদের শরীর কেমন থাকে এবং প্রেমে পড়ার পর কেমন হয়। লিয়াকত নামে অপর একজনের সেন্ড করা গর্ভবতী মহিলার পেটে চুম্বনের দৃশ্যে অনেকেই আ লিক ভাষায় নোংরা বার্তা আদান প্রদান করেন। নারীদের শারীরিক ভাষা ব্যবহার করার পাশাপাশি তারা একে অন্যের স্ত্রীকে হাওলাত করার মতো অশালীন শব্দও লেখেন। এসব শিক্ষকগণ স্থানীয় হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। অনেকে একটু প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলেই তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শিক্ষক নামের মর্যাদাকর শব্দটির অপব্যবহার করছে এখানকার কিছু নোংরা মনের মানুষ। তারা নারী শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে টিজ করেন। ক্লাসে অশ্লীল কথাবার্তা থেকে শুরু করে অশালিন অঙ্গভঙ্গি করে ব্রিবতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলেই আরো বেশি করে তারা উত্যক্ত করেন। যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এক প্রকার বাধ্য হয়েই এসব কথা হজম করতে হচ্ছে। স্যারদের কাছে অভিযোগ করলেও বিপদ। তাদের উপর নেমে আসে বিভিন্ন ঝক্কি-ঝামেলা। বাইরের উপজেলা থেকে যারা আসেন তাদেরকে বেশি টার্গেট করা হয়। যারা এ রকম অশ্লীল কথাবার্তা বলে বা লেখে তারা সবসময় স্থানীয় আর সরকার দলীয় লোক পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে পিটিআই এ চলাচল করে। বিগত বছরগুলোতেও ডিপিএড প্রশিক্ষণার্থীদের এরকম পরিস্থিতিতে পরতে হয়েছে বলে জানা গেছে। তারাও কোন প্রতিকার পায়নি।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি এড.আহসান হাবীব নীলু জানান, শিক্ষকদের কাছ থেকে এ ধরণের আচড়ণ কারো কাম্য নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে তারা শিক্ষক সমাজের মর্যাদাহাণি করেছে। এদেরকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রতিমা চৌধুরী জানান, কর্মক্ষেত্রে নারীরা সব সময়ই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আসছে। এক শ্রেণির পুরষরা নারীদেরকে ভোগের সামগ্রী ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারে না। এদের অসভ্যতা ও লালসার কারণে পদ পদে লাঞ্ছিত হচ্ছে নারী সমাজ। এদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পিটিআই ইনস্টিটিউটের সুপার আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সানাউল্লাহ এই প্রতিবেদককে জানান, এই ম্যাসেঞ্জারের বিষয়ে আমি অবগত নই। কে বা কারা এটা চালাচ্ছে আমি জানি না। শিক্ষকরা যদি এর অপব্যবহার করে থাকেন তাহলে সেটা দু:খজনক হবে। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানান।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.