চট্টগ্রাম নগরীতে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদারে ক্রাশ প্রেগ্রাম চালানোর দাবি- ক্যাব চট্টগ্রাম

0

চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ নালা-নর্দমা ও সড়কের আশপাশ এবং ডাস্টবিনসহ বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় সহজেই মশার বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দিনের বেলায়ও মশায় উৎপাত থেকে রেহাই মিলছে না। বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থলসহ সর্বত্রই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মশা। মশা নিধনের ঔষধ স্প্রে করার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে ৩/৪ জন করে চসিকের লোক থাকলেও মাঠে মশক নিধনের কোন দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। চসিকের দাবি অনুযায়ি জুলাই থেকে মশা নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে মশার ডিম ধ্বংসকারী ঔষধ লার্ভিসাইড এবং পূর্ণবয়স্ক মশা ধ্বংসকারী ওষুধ এডালটিসাইড ছিটানো হয়েছে। এসব ঔষধ ছিটানোর জন্য ৪১টি ওয়ার্ডে ১২০ জন কর্মী নিযুক্ত আছে। সত্যিকার অর্থে চসিকের মশক নিধন কার্যক্রম চলমান থাকলে মশার উৎপাত এ পর্যায়ে পৌছাঁর কথা নয়। শীতকালে নগরবাসীকে মশার অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে নগরীর মশক নিধন কার্যক্রম জোরদারে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু, মশক নিধন কার্যক্রমের বিষয়ে নগরবাসীর কাছে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগ ও ব্যয়ের তথ্য উপস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। নগরীতে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ নগরবাসীর অসহ্য যন্ত্রণায় সিটিকর্পোরেশনের ক্রাশ প্রোগ্রাম দাবি করে এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আজম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রামকে ক্লিন ও গ্রীন সিটি নির্মানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা উদ্যোগ নিলেও সর্বত্র এ কার্যক্রমগুলি দৃশ্যমান হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রতিবছর সিটিকর্পোরেশন মশক নিধনের জন্য বিশাল অংকের বরাদ্দ ঘোষনা করলেও মশক নিধন কার্যক্রমের তৎপরতা চোখে পড়ছে না। ফলে মশার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ নগরবাসীর দিনে ও রাতে বসবাস কষ্ঠসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। ফলে সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রমের কার্যকারিতা ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন নগরীতে মশার উৎপাত বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চসিক প্রতি বছরই মশকনিধন কর্মসূচি হাতে নেয়া হলেও মেশিন ঝুলিয়ে কদাচিৎ এই মশক নিধন-কর্মীরা চলে যায় বলে অভিযোগ আছে। নগরীর কোণায় কোণায় তাদের পা পড়ে না। ফগার থেকে সামান্য উদগীরণ করেই দায়িত্ব শেষ করে দেয়। ফলে ফগার মেশিনের ওষুধে অকুস্থলে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হলেও মশককুলের কিছুই যায়-আসে না। মশককুল নিশ্চিন্তে বংশ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। এ জন্যে মশক নিধন অভিযানের মাঠ পর্যায়ে যথাযথ মনিটরিং না থাকায়, শুধু দু’এক স্থানে ওষুধ ছিটিয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ না করে মশার বংশ বিস্তারের সুযোগ নেয় যেসব স্থানে, মশক নিধন-কর্মীদের সেসব স্থানে পাঠিয়ে সফল অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি শহর-পরিচ্ছন্ন অভিযানও জোরদার করা, ওষুধের যথাযথ মানও নিশ্চিত করার দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ ক্লিন ও গ্রীন সিটির আন্দোলন জোরদারে যত্রতত্র ময়লা ফেলা, পরিস্কার পরিছন্নতা, ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গুজ্বর বিষয়ে ব্যাপক প্রচার চালানোর মাধ্যমে নগরবাসীকে সচেতন করার উদ্যোগ নেবার দাবি জানান। সমাজ পরিবর্তনে নিবেদিত ও সমাজের সচেতন মহল এবং সামাজিক সংগঠনগুলিকেও এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার দাবি জানান। প্রতিটি পরিবারের নিজ নিজ বাসার আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখলে মশার প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কমবে।
এছাড়াও নিয়মিত সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার, প্রতি সপ্তাহে ট্যাংকে কালো তেল বা কেরোসিন ছিটানো, পাশাপাশি নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখালে মশার বংশ বিস্তার রোধ হবে এবং নগরবাসী মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাবে বলে আশা করেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, প্রমুখ।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.