চাঁদে হবে ছত্রাকের বাড়ি

0

চাঁদ ও মঙ্গলের বুকে ঘরবাড়ি বানানোর লক্ষ্যে বিজ্ঞানীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। ইট, সিমেন্ট ও বালু দিয়ে নয়, এসব বাড়ি বানানো হবে ছত্রাক দিয়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছত্রাকের মূল অংশ ‘মাইসেলিয়া’কেই এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কাজে লাগানো হবে।

ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারে ‘মাইকো-আর্কিটেকচার প্রজেক্টে’র প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর লিন রথসচাইল্ড গত রোববার নাসার ওয়েবসাইটে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, চাঁদ আর মঙ্গলে গড়ে তোলা সেই সব বাড়িতে শুধু মানুষ থাকবে, তা নয়। থাকবে ‘সায়ানোব্যাকটেরিয়া’ জাতের নানা ধরনের অণুজীবও। এরা বাঁচার প্রয়োজনে শুষে নেবে সৌরশক্তি, যা দিয়ে পানি ও বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে বদলে দেয় নিজেদের খাবার ও অক্সিজেনে। বায়ুমণ্ডলহীন চাঁদ ও মঙ্গলের বুকে আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের বাতাস হয়ে উঠবে ওই অক্সিজেন। পানি ও বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ভেঙে এসব অণুজীব বানাতে পারে আরও কিছু পদার্থ, যা খেয়ে মানুষ সেখানে বেঁচে থাকবে। পৃথিবীর বাইরে আমাদের বসতি বানাতে ধাতুর ব্যবহার যত কম করা যায়, সে কথা মাথায় রেখেই এবার কাজ করছে নাসা। সে লক্ষ্যে শুরু হয়েছে ছত্রাক নিয়ে কাজ।

লিন রথসচাইল্ড জানান, চাঁদে ও মঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হবে ছত্রাক, যা অসম্ভব হালকা। ফলে বহনের ব্যয়ও কমবে। সুদীর্ঘ পথ পেরোনোর সময় ছত্রাক মরে যাবে না। এমনকি নিস্তেজও হয়ে পড়বে না। ছত্রাকের মাইসেলিয়ার বেড়ে ওঠার ক্ষমতা অসাধারণ। মঙ্গলে ও চাঁদের অসম্ভব রুক্ষ পরিবেশে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এই ছত্রাক।

বিজ্ঞানীরা জানান, চাঁদে ও মঙ্গলের বুকে বাড়িগুলো হবে ত্রিস্তরবিশিষ্ট গম্বুজের মতো। সবচেয়ে ওপরের স্তরে থাকবে জমাট বাঁধা বরফ। এটি অসম্ভব ক্ষতিকারক তীব্র বিকিরণের হাত থেকে বসতিগুলোকে বাঁচাবে। আর এ থেকে গলে পড়া পানি পৌঁছে যাবে দ্বিতীয় স্তরে থাকা ছত্রাক ও সায়ানোব্যাকটেরিয়া জাতের অণুজীবগুলোর কাছে। যারা সৌরশক্তি দিয়ে সেই পানিকে ভেঙে তাদের প্রয়োজনীয় খাবারদাবার পাবে। আর তৃতীয় স্তরে থাকা মাইসেলিয়াকেও রক্ষা করবে, যা থেকে ফের ছত্রাক গজাতে পারবে।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.