কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে কথিত পৃথক বন্দুকযুদ্ধে ২ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর ও বৃহস্পতিবার রাতে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ এ সব ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা-অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, দেশের শীর্ষ ইয়াবা ডন সাইফুল করিমকে (৪৫) পুলিশ অস্ত্র ও মাদক মামলায় গ্রেফতার করেন। পরে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সে পুলিশের কাছে স্বীকার করছে যে গত কয়েক দিন পূর্বে ইয়াবার একটি বড় চালান ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে মিয়ানমার থেকে এনে টেকনাফের সদর স্থলবন্দরের সীমানা প্রাচীরের শেষ প্রান্তে নাফনদীর পাড়ে মজুদ করেছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইয়াবা উদ্ধারে শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের একটি দল তাকে নিয়ে উক্ত স্থানে পৌঁছালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা তার অস্ত্রধারী সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এতে পুলিশের ৩ সদস্য আহত হয়েছেন। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এতে আটককৃত মো. সাইফুল করিম গুলিবিদ্ধ হয়। গোলাগুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে এক পর্যায়ে অস্ত্রধারী মাদক কারবারিরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকায় ব্যাপক তল্লাশী করে ৯টি এলজি, ৪২টি রাউন্ড শর্টগানের তাজা কার্তুজ, ৩৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা এবং ১ লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মুল্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। পরে গুরুতর আহত গুলিবিদ্ধ ইয়াবা ডন সাইফুল করিমকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরও জানান, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত সাইফুলের বিরুদ্ধে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থানায় ৭টি মামলা রয়েছে।
অপরদিকে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল ফয়সল হাসান খান জানান, ইয়াবার একটি বড় চালান মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে এমন সংবাদে বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফ বিওপি একটি বিশেষ টহলদল ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। টহলদল দূর থেকে কয়েকজন লোককে হস্তচালিত নৌকা নিয়ে নাফনদী পার হয়ে নৌকাটি আসতে দেখে টহলদল চ্যালেঞ্জ করলে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক চোরাকারবারিরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। পরে আত্মরক্ষার্থে বিজিবি পাল্টা গুলি চালালে এক পর্যায়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল তল্লাশি করে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কাঁদার মধ্যে পরে থাকতে দেখে। পরে নৌকাটি তল্লাশি করে এক লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১টি লোহার ধারালো কিরিচ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।