অক্সফোর্ডের তৈরি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের সঙ্গে ত্রিপক্ষীক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে প্রথম পর্যায়ে অক্সফোর্ডের ৩ কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন সরবারহ করবে সেরাম ইনস্টিটিউট। চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এই টিকা বিতরণ করা হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ যারা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
পর্যায়ক্রমে দেশের সবাইকে টিকার আওয়তায় আনার ব্যবস্থা করা হবে বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সম্ভাব্য এ টিকার পরীক্ষা ও উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি ভারতেও এসএআরসি-সিওভি-২ এজেডডি ১২২ নামের ওই টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে।
এই টিকার ১০০ কোটির বেশি ডোজ উৎপাদন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরবরাহের জন্য অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং গেটস ফাউন্ডেশন ও গ্যাভির সঙ্গে আংশীদারিত্ব চুক্তি রয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউটের।
আর ভারত থেকে টিকা এনে বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য গত অগাস্টে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ওষুধ খাতের শীর্ষ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
সেই চুক্তি অনুযায়ী, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস বাংলাদেশে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’। এখন বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারত থেকে ওই টিকা কেনার জন্য সমঝোতায় পৌঁছালো বাংলাদেশ সরকার।
তবে আনার আগে এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেতে হবে বলে সমঝোতা স্মারকে উল্লখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সরকারের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকোর তিন কর্মকর্তা নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক ছাড়াও ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘ দিনের জল্পনা-কল্পনা সমাপ্তির পথে…। তিন কোটি ডোজ টিকা দেবে। যখনই এটা তৈরি হবে, তখনই বাংলাদেশকে প্রথম সুবিধামত সময়ে দেবে। বেক্সিমকো এই ভ্যাকসিন আনার ব্যবস্থা নেবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ডিপোতে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।” তিনি জানান, প্রত্যেকের জন্য দুটি করে ডোজ লাগবে। অর্থাৎ তিন কোটি ডোজ টিকা আনলে দেড় কোটি মানুষকে তা দেওয়া যাবে।
“একটি ডোজের ২৮ দিন পর আরেকটি ডোজ দিতে হবে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ডোজ দিতে পারবে বলে তারা জানিয়েছে। এখানে স্টোরেজের ব্যবস্থা উনারাও করবে, আমরাও করব।” বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাংসদ নাজমুল হাসান বলেন, “সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের যোগসূত্রটা আমরা করে দিয়েছি।”