বাবরি মসজিদ নিয়ে যা বললেন মোদি

0

বাবরি মসজিদ মামলার রায় হতে যাচ্ছে শিগগিরই । ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের তিন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের ভিত্তিতে এই রায় দেবে দেশটির শীর্ষ আদালত। বিচারপতি শিবগত উল্লা খান, বিচারপতি ধরমবীর শর্মা এবং বিচারপতি সুধীর আগরওয়াল রায় দিয়েছিলেন, অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি ভগবান রামলালা বিরাজমন, নির্মোহী আখড়া এবং সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের মধ্যে সমান তিন ভাগে ভাগ করে দেওয়া হোক।

আর এ মামলার রায় নিয়ে কোনও বিতর্কিত মন্তব্য না করতে মন্ত্রিসভার সদস্যদের অনুরোধ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার তিনি এ ব্যাপারে মন্ত্রিসভার সদস্যদের অনুরোধ করেন বলে জানা গেছে।
বাবরি মসজিদ মামলার রায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়দানের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই অনুরোধ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদি বিষয়টি নিয়ে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন।

জানা গেছে, বুধবার মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, প্রত্যেকেরই দায়িত্ব আছে বিষয়টি নিয়ে শান্তি বজায় রাখার। এব্যাপারে অযাচিত মন্তব্য থেকে দূরে থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
নভেম্বরের ১৭ তারিখের আগেই অযোধ্যা নিয়ে রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। কেননা ওইদিন অবসর নিতে চলেছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

এর আগে শাসক বিজেপির তরফ থেকে তাদের কর্মীদের এক মুখপত্রদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল, যাতে তারা রামমন্দির নিয়ে সংবেদনশীল এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য না রাখেন। পাশাপাশি দলের সাংসদদের বলা হয়েছিল, তারা যেন নিজের নিজের সংসদীয় এলাকায় থেকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেন।

আরএসএস-এর পক্ষ থেকেও এ ধরনের সতর্কতামূলক অনুরোধ করা হয়েছিল দিন কয়েক আগে। রায় যদি তাদের পক্ষেও যায়, তাহলেও, যেন কোনও মিছিল বের করা না হয়, কর্মীদের বলা হয়েছিল আরএসএস-এর পক্ষ থেকে।

বাবরি মসজিদ কি প্রাচীন কোনও হিন্দু মন্দিরস্থলে বানানো হয়েছিল?

এলাহাবাদ হাইকোর্টের তিন বিচারপতি এ ব্যাপারে ভিন্ন মত ধারণ করেছিলেন। বিচারপতি খান বলেছিলেন, মসজিদ নির্মাণের জন্য কোনও মন্দির ধ্বংস করা হয়নি, মসজিদ নির্মিত হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে শায়িত মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর এবং মসজিদ বানানোর জন্য তার কিছু উপাদান ব্যবহৃতও হয়েছিল। তিনি বলেন, হিন্দুরা আগে বিশ্বাস করত যে বিতর্কিত বিশাল এলাকার ক্ষুদ্র একটি স্থানে রাম জন্মেছিলেন, যার জেরে হিন্দুরা বিশ্বাস করতে শুরু করেন গোটা বিতর্কিত এলাকাই রামের জন্মভূমি। বিচারপতি খান বলেন, ১৮৫৫ সালের আগেও রাম চবুতরা এবং সীতা রসুইয়ের অস্তিত্ব ছিল এবং হিন্দুরা সেখানে প্রার্থনা করতেন। তার এই বক্তব্যই গোটা জমি তিনভাগ করে দেওয়ার ভিত্তি।

বিচারপতি আগরওয়াল বলেন, সৌধ কেবলমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরাই ব্যবহার করতেন না, এবং ১৮৫৬-৫৭ সালের পর বাইরের অংশ কেবলমাত্র হিন্দুরা ব্যবহার করতেন এবং ভেতরের অংশে দুই সম্প্রদায়ের মানুষই প্রার্থনা করতেন।

বিচারপতি শর্মা জোর দিয়ে বলেন, মসজিদ হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর তৈরি হয়েছিল। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর সৌধ ধ্বংসের পর আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া যেসব তথ্য পেয়েছিল তার উপর নির্ভর করে তিনি বলেন, যে ২৫৬টি খোদাই করা লেখা পাওয়া গিয়েছে, তার সবই একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীতে দেবনাগরী ভাষায় লিখিত। এ ছাড়াও এএসআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল ডক্টর রাকেশ তিওয়ারির সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করেছিলেন তিনি। রাকেশ তিওয়ারির মতে, একটি পুরনো মন্দির ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.