বেনাপোল প্রতিনিধিঃ পবিত্র ঈদুল আজহা, জাতীয় শোক দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা ছুটি পাওয়ায় ভারতে যাওয়ার ধুম পড়েছে। ভিসা সহজলভ্যতা ও কম খরচের কারণে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে ও চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন। ঈদের ছুটি শেষ হয়ে এলেও এখনও দলে দলে ভারতে ছুটছে মানুষ।
বাংলাদেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোলে ভারতগামীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘক্ষন লাইনে দাড়িয়ে অনেকে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন৷
বুধবার ভোর ৬টা থেকে সারাদিন বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের লাইন ছিল প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশসহ কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
ভারতগামী যাত্রী অভিজিৎ শর্মা জানান, তিনি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পরিবারের কয়েকজনকে ডাক্তার দেখানো দরকার। কিন্তু এতদিন ছুটি না পাওয়ায় যেতে পারেননি। এখন লম্বা ছুটি পেয়ে সীমান্ত পার হচ্ছেন। ওখানে আত্মীয়-স্বজন আছেন, তাদের সঙ্গেও দেখা হবে।
ইমিগ্রেশনের জন্য অপেক্ষারত বর্ণালী ভট্টাচার্য বলেন, আমার স্বামী একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বেশ কিছুদিন থেকে ভারতে যেতে চাচ্ছিলাম। ঈদে কয়েকদিনের ছুটি পাওয়ায় সেখানে ঘুরতে যাচ্ছি।
লোকমান হোসেন রাসেল নামের এক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘ তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এর আগে কোনো দিন এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। ঈদের ছুটিতে কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন ভারতে যাচ্ছে। তবে রোগীদের জন্য আলাদা একটি লাইন করলে ভালো হতো।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি (তদন্ত) মাসুম বিল্লাহ বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এ পথে বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিদিন সাধারণত ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ ভারতে যান। এখন ঈদের ছুটিতে তা আরও বেড়েছে। ঈদের আগের দিন ১১ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে গেছেন ১৮ হাজার ১৮৬ জন যাত্রী। এদের মধ্যে বাংলাদেশি যাত্রী রয়েছে ১৬ হাজার ৯১০ জন, ভারতীয় এক হাজার ২৬৩ জন ও অনান্য দেশের ১৩ জন। যাত্রীদের সেবায় ইমিগ্রেশনের লোকজন একটানা কাজ করে যাচ্ছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি সরকার বলেন, ঈদের ছুটিতে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও কাস্টমস ইমিগ্রেশনের সব শাখা খোলা আছে। অন্যান্য সময়ের চাইতে এখন যাত্রীদের যাতায়াত বেশি। তারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ভারতগামীদের কাছ থেকে ৪৫ টাকা টার্মিনাল চার্জ নিলেও তাদের দিতে পারছে না বসার জায়গা। মাত্র ৫০ জনের বসার সিট রয়েছে টার্মিনালের ভেতরে। অথচ এ পথে প্রতিদিন চার থেকে ছয় হাজার যাত্রী ভারতে যায়। যাত্রীরা টার্মিনাল চার্জ দিয়েও বাইরে দাঁড়িয়ে রোদে পুড়ছে, বৃষ্টিতে ভিজছে। সব মিলিয়ে বেনাপোল চেকপোস্টে অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনায় যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।