বেনাপোল সংবাদদাতা : চোরাচালানীরা ভারতে সোনা পাচারে বেনাপোল আর্ন্তজার্তিক চেকপোষ্টকে ব্যবহার করছে নিরাপদ রুট হিসেবে। সোনা পাচারকারীরা ইতোপুর্বে জুতার ভিতর, ব্যাগের ভিতর, পরনের প্যান্টের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে স্বর্ন পাচার করতো পাসপোর্ট যোগে। বেনাপোল শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসব কৌশল জেনে ফেলায় এখন তারা কৌশল পরিবর্তন করে পায়ু পথে সোনা পাচার করছে ভারতে। এই পদ্ধতি বেশ কষ্ট দায়ক হলেও এটি তারা নিরাপদ মনে করছে। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বেনাপোল আর্ন্তজাতিক চেকপোষ্ট এলাকা থেকে ১৯ কেজি ৩০৪ গ্রাম স্বর্নসহ ২৭জন পাচারকারীকে আটক করা হয়।
সোনা পাচার এই ভাবে হওয়ায় ‘স্বর্নমানব’ নাম দেয়া পাচারকারিদের। গোপন সংবাদ পাওয়ার পর তাদের আটক করে জিঞাসাবাদ করলে তারা স্বীকার করে। হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে নিয়ে এক্সরে করানোর পর শুল্ক গেয়েন্দা কর্মকর্তারা তাদের পেটের ভিতর থেকে পায়ু পথে সোনার বের করে আনতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের খাওয়ানো হয় কলা, পাউরুটিসহ তরল খাবার। ২ থেকে ৪ ঘন্টা পর পায়ু পথেই সোনার বার উদ্ধার করা হয়। ‘স্বর্ন মানবের’ পায়ু পথ থেকে সর্বোচ্চ ১৭টি পর্যন্ত সোনার বার উদ্ধার করে বেনাপোল শুল্ক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
বেনাপেল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের ডেপুটি কশিনার শফিয়ার রহমান জানান ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বেনাপোল আর্ন্তজাতিক চেকপোষ্ট এলাকা থেকে ১৯ কেজি ৩০৪ গ্রাম স্বর্নসহ ২৭জন স্বর্ন চোরাচালানীকে আটক করেছে শুল্ক ও গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে রয়েছে ৬জন ‘স্বর্ন মানব’। আটক সোনার বাজার মুল্যে ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানায় থানায় মামলা হয়েছে ১৯টি।
বেনাপেল চেকপোষ্ট থেকে সর্ব শেষ ৭ জুন আটক স্বর্ন মানব শরিয়তপুর জেলার আব্দুল মান্নান ব্যাপারীর ছেলে লাভলু ব্যাপারী জানান, এ সব স্বর্ন তার নয়। তিনি বাহক মাত্র । ঢাকা থেকে প্রতি পিচ স্বর্নের বার কলকাতার নিদিষ্ট স্থানে পৌছে দিলে তাকে দেয়া হয় পিচ প্রতি ২ হাজার টাকা। এ স্বর্ণের প্রকৃত মালিক কে তা তারও জানা নেই। তার এক বন্ধু ‘সাব কন্ট্রাক্ট’ নিয়ে এ সব স্বর্ণের বার কলকাতায় পৌছে দিতে বলেছে।
জানা গেছে, এসব স্বর্ণের মালিক কে বা কারা তা জানা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। কয়েক হাত বদল হয়ে পাচার হয় বিধায় মুল মালিককে খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। যারা ধরা পড়ে তারা কেবল বাহক মাত্র। বিপুল পরিমান সোনার মাত্র সামান্য অংশই পাচারের পারিশ্রমিক হিসেবে পায় তারা ।