সাদার্ন ইউনিভার্সিটিতে হৃদরোগ সচেতনতা, চিকিৎসা, প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’’ শীর্ষক সেমিনার

0

মাসিক দখিনা ও সাদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এবং ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের সহযোগিতায় ‘‘হৃদরোগ সচেতনতা, চিকিৎসাঃ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’’ শীর্ষক সেমিনার আজ মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটির মেহেদীবাগ ক্যাম্পাসের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এএফসি হেলথ ফর্টিস হার্ট ইনিস্টিটিউট, চট্টগ্রাম এর চিফ কনসালটেন্ট ও পরিচালক ডা. এ.এম শফিক।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাদার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নুরুল মোস্তফা। আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল’র অধ্যক্ষ এ এস এম মো¯তাক আহমেদ, সার্দান ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সরওয়ার জাহান, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের উপদেষ্টা দোলন ঘোষ দস্তিদার, কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সরওয়ার কামাল, প্রফেসর ড. শরীফুজ্জামান, সাদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি বিভাগের প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ মহিউদ্দীন চৌধুরী, ইন্টারভেনশনাল কনসালটেন্ট কার্ডিওলোজিস্ট ডা. মো. আখতার হোসাইন, মাসিক দখিনার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মুশফিক হোসাইন ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

ম‚ল প্রবন্ধে ডা. এ.এম. শফিক জন্মগত, বাতজ্বর জনিত, হৃদপিন্ডের নিজস্ব রক্তসররাহের ঘাটতিজনিত, অনিয়মিত হৃদস্পন্দনজনিত হৃদরোগের কারণ, লক্ষণ, প্রতিবিধান ও প্রতিরোধ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এখন বাতজ্বর জনিত হৃদরোগের হার অধিকাংশেই হ্রাস পেলেও জন্মগত, হৃদপিন্ডের নিজস্ব রক্তসররাহের ঘাটতি জনিত এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনজনিত হৃদরোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এক্ষেত্রে জন্মগত ত্রুটি পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব না হলেও গর্ভকালীন সময়ে এক্সরে এবং ঔষধ সেবনে সাবধানতা অবলম্বন করলে, পঁয়ত্রিশোর্ধ বয়সে ১ম সন্তান গ্রহণ না করে এবং বহুম‚ত্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে জন্মগত ত্রুটিজনিত হৃদরোগ উল্লেখযোগ্য হারে কমানো সম্ভব। হৃদপিন্ডের নিজস্ব রক্তসররাহের ঘাটতি জনিত হৃদরোগ যা এখন বাংলাদেশসহ সবখানে হৃদরোগের সর্বাধিক বিস্তৃত ধরন তা প্রতিরোধে তেলচর্বিমুক্ত খাদ্যাভ্যাস, কর্মময় জীবনাচারণ এবং চাপমুক্ত ইতিবাচক মানসিকতা উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বর্তমানে চট্টগ্রামেও যে হৃদরোগের বিশ্ব্মানের চিকিৎসা সম্ভব সে আশ্বাস ব্যক্ত করেন।

অন্যান্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেন, দেশে হৃদরোগের কারণে মৃত্যুর হার বাড়ছে। মানুষের অসচেতনতা ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে তা আরও বিস্তার লাভ করছে। নিয়মিত হাটা, ব্যায়াম, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করলেই এ রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্যা সংস্থার ২০১৭ এর প্রতিবেদন মতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হৃদরোগ ঝুঁিকতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। বাংলাদেশে এখন এ রোগের ভালো চিকিৎসা থাকলেও অপপ্রচারের কারণে মানুষ বিদেশমুখি হচ্ছে। দেশের চিকিৎসার সেবার সঠিক তথ্য প্রচারে মিডিয়া অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। ভুল চিকিৎসার কারণে কারো মৃত্যু হলে দোষী ডাক্তারদের বিচার হওয়া উচিৎ তবে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী বলা ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তারা।

সার্দান ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সরওয়ার জাহান বলেন, দেশের চিকিৎসা সেবার প্রতি মানুষের আস্থা অর্জনে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জনপ্রতিনিধি ও সরকারের উচ্চ মহল। যদি তাঁরা নিজেদের চিকিৎসা দেশে করেন তবে সাধারণ মানুষের মনেও আস্থা তৈরি হবে। এতে চিকিৎসা সেবার মানোন্œয়ন নিশ্চিত হবে।

প্রধান অতিথি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নুরুল মোস্তফা মাসিক দখিনা ও ফার্মাসি বিভাগকে এমন সুন্দর আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। সচেতনতা বাড়াতে এ ধরনের সেমিনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত দেন।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.