৭ দফা দাবী বাস্তবায়ন হলে সীতাকুণ্ডে অপ্রত্যাশিত সড়ক দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ কমে যাবে

0

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি :
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডে অংশে অপ্রত্যাশিত সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে ৭ দফা দাবী প্রস্তাব দিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ও সেবক। ১৮ জানুয়ারী ২০২০ শনিবার সকালে চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড ফৌজদারহাট জলিল গেইট এলাকায় “জীবন যবনিকায় সীতাকুণ্ড কেন শেষ ঠিকানা ? অপ্রত্যাশিত সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল জীবননাশ” এর প্রতিবাদে যাত্রী অধিকার আন্দোলনে কর্মরত সংগঠন যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ও এসো সড়ক দুর্ঘটনা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কর্মরত সংগঠন সেবকের যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। উক্ত মানববন্ধন শেষে ৭ দফা দাবীতে হাইওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপারের মাধ্যমে অতিরিক্ত আইজিপি কে স্মারকলিপি প্রদান করে সংগঠনগুলো।

মানববন্ধনে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী বলেন, মুজিববর্ষ শুরু হওয়ার প্রথম মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে ১৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৫ জন, আহত হয়েছেন ৩০ জন। যানবাহনের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়লেও মহাসড়কে যান চলাচলে প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হচ্ছে। একটি দুর্ঘটনা শুধু প্রাণই কেড়ে নেয় না, একটি পরিবারকে তছনছ করে দেয়। আর পঙ্গু হলে সারাজীবন তা বয়ে বেড়াতে হয়। ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালালে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। তাই চালক-যাত্রী ও পথচারীদের সচেতন হতে হবে হাইওয়ে পুলিশকে আন্তরিক হতে হবে।

মানববন্ধনে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোখতার হোসাইনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, সীতাকুণ্ড সমিতি চট্টগ্রাম এর সাবেক সভাপতি লায়ন মো. গিয়াস উদ্দিন, সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লিটন কুমার চৌধুরী, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী, সেবক চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মন্জুরুল আলম, উত্তর জেলা সদস্য সচিব সুজন মল্লিক, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের হাবিবুর রহমান, রুচমিলা আক্তার, সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে ৭ দফা প্রস্তাবনা দেয় সংগঠনগুলো ঃ
১) ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মুখটি ত্রিমুখী। সড়কের মূখের জেলা পুলিশের পুলিশ বক্সটি সরিয়ে পাশে খালি জায়গায় করতে হবে।
২) ভাটিয়ারি এলাকায় আন্তঃজেলার দূরপাল্লার বাসগুলো ও সীতাকুণ্ড ’র লোকাল যানবাহনগুলো মহাসড়কের উপর যত্রতত্র এলোমেলোভাবে দাড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করে। এই এলাকায় তিন শিপ্টের মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশের ডিউটি বন্টন করতে হবে।
৩) বারআউলিয়া এলাকায় রাস্তার দুইপাশে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে। বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার সামনে চট্টগ্রামমুখী মহাসড়কে যাওয়ার জন্য একটি সংযোগ সড়ক তৈরি করে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই সংযোগ সড়কে কোন সিগন্যাল না থাকায় ট্রাক ও লরি সরাসরি মহাসড়কে উঠে যাচ্ছে, যার ফলে চট্টগ্রামমুখী যানবাহনগুলো দুর্ঘটনার আশংকায় থাকে। এছাড়া ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের গেইটে দুই মহাসড়কের মধ্যখানে একটি ওজন স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। এই ওজন স্কেলে দুই পাশ থেকে ট্রাক ও লরি প্রবেশ করে এবং বের হয়, যার ফলে চট্টগ্রামমুখী ও ঢাকামুখী দুইপাশেই যানবাহনে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।।
৪) মহাসড়কে সীতাকুণ্ড অংশে সিসি টিভি স্থাপনের মাধ্যমে দুর্ঘটনার কারন নির্ণয় ও বেপরোয়া গতিতে চলাচলকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫) ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশের সড়কের মধ্যখানে অবৈধ মিডিয়াম গ্যাফ অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৬) বড়দারোগার হাট এলাকায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেল থাকায় এই এলাকায় যাত্রীবাহী যানবাহন গুলোর চলাচলের জন্য সন্ধ্যার পরে একটি লেইন খালী রাখা ও এই এলাকায় সার্বক্ষনিক হাইওয়ে পুলিশের ডিউটি বন্টন করতে হবে।
৭) চট্টগ্রাম-সীতাকুণ্ড রোডে চলাচলকারী ফিটনেস বিহীন ছোট যানবাহনগুলো বন্ধ করতে হবে। এই রুটের চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যাত্রী উঠা নামার জন্য নিদিষ্ট বাস স্টপেজ নির্ধারণ করতে হবে। বিভিন্ন বাজারের বাস-বে গুলো দখলমুক্ত করতে হবে।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.