সন্তানের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়ে উঠুক এটাই সকল মা-বাবার কামনা। সকল মা-বাবা চান তাদের সন্তান হবে নম্র-ভদ্র-মার্জিত এবং বিবেকবোধসম্পন্ন। সন্তানকে এরূপ আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে মা-বাবাকেই রাখতে হবে অগ্রগণ্য ভূমিকা। মা-বাবা সবসময়ই সন্তানদের কাছে উত্তম আদর্শ। এই আদর্শ সন্তানের সামনে তুলে ধরতে হলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের প্রভাবে শিশুদের মন, মেজাজ ও দৃষ্টিভঙ্গি কেমন তার খোঁজখবর রাখতে হবে স্বয়ং মা-বাবাকেই। ছোট বয়সে মা-বাবারাই শিশুদের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু তাদের সন্তান যখন বড় হতে থাকে তখন তার চিন্তাভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি বন্ধু-বান্ধবের দ্বারা প্রভাবিত হতে থাকে। সন্তান বয়োঃপ্রাপ্ত হলে সে স্বাধীন চিন্তাশক্তি এবং স্বকীয় বুদ্ধিবিবেচনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তাই সন্তান বয়োঃপ্রাপ্ত হওয়ার আগে থেকেই তার জীবনধারার পরিপ্রেক্ষিতে মা-বাবাকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। মা-বাবাকে নিতে হবে আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকা। কোনটি ভালো কোনটি মন্দ, কোনটি করা উচিত কোনটা করা অনুচিত এসব সম্পর্কে পারঙ্গম ধারণা দিতে হবে শিশু বয়স থেকেই। সাধারণত শিশুরা এতো অল্প বয়সে কার্যকারণ বোঝার মতো ক্ষমতা অর্জন করতে পারে না। সেক্ষেত্রে মা-বাবাকে কার্যক্ষেত্রে জীবন্ত আদর্শ হয়ে কাজ করতে হবে। ধীরে-সুস্থে, আন্তরিক মমতা দিয়ে শেখাতে হবে। শিশুর সাথে রুক্ষ-রূঢ় মেজাজ কখনোই কাম্য নয়। তবে প্রয়োজনবোধে শাস্তির প্রয়োগ করা যেতে পারে। ছোট বয়সেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং বাড়ির ছোট ছোট কাজগুলোর প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। সক্ষম হলে নিজের কাপড় ধোয়া, নিজের বিছানাপত্র পরিপাটি রাখার অভ্যাস সৃষ্টি করে তুলতে হবে। মা-বাবারাই শিশুর প্রথম শিক্ষাদাতা। তাই সন্তানের অন্তরে সঠিক আচরণের বীজ রোপণ করতে হবে শিশু বয়সেই। এটাই হবে সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম বুনিয়াদ। শিশু যখন ক্রমশ বড় হবে, এই বুনিয়াদি শিক্ষাই তার স্বভাবের সংগে মিলিয়ে আদর্শ আচরণ করতে প্রেরণা যোগাবে। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই নিজেকে অসদাচরণ থেকে বিরত রাখতে পারবে।
লেখক
অর্ক বড়ুয়া
পরিচালক, প্রভাতী একাডেমিক কোচিং।